রাজন্য রুহানি || গুচ্ছকবিতা
রাজন্য রুহানি  || গুচ্ছকবিতা

❑ মৎস্যকন্যাদের সমুদ্রবিজ্ঞান

পাহাড়ের চূড়ায় দাঁড়ালে সমতলের সবকিছুই ক্ষুদ্র মনে হয়; যদিও মানুষ পাড়ি দিয়েছে অচেনা সমুদ্দুর, নরম হাতেই বানিয়েছে কংক্রিটের সুখ।

অ্যালবাট্রস পাখির খিদে নিয়ে যে নাবিকেরাই দিক ভুলে যায়, তাদের মৃত্যুদণ্ড দিই ঝর্ণার রজ্জুতে, মৎস্যকন্যাদের আশ্রমে কিছুকাল শিখুক তারা সমুদ্রবিজ্ঞান, জন্মভাটির অক্ষর চেনা হলে একদিন কম্পাসজন্মের ইতিহাস খোঁড়া হবে, তারপর পাহাড় চিনুক।

মহিমার্ণব স্ট্যাচুর অন্ধকারে পাহাড়ের অহংকার দেখি।

❑ কালকূট

১.
শিসের হাট
অানমনা কিশোরী
ঘাসেরা নীল

২.
চোখের সাপ
দিনের অমাবস্যা
পেঁচার রাত্রি

৩.
তিনের ঘর
সতীনের উনুন
কালবৈশাখী

❑ ক্রুশজন্মের পৃথিবী

ক্ষরণের নাভি ক্রস করে উড়ে গেলে মাছি, হাতেপায়ে ক্রুশ জেগে ওঠে। আমি তখন মা মা চিৎকারে সাদা ফুল আঁকি লাল পিঁপড়ের বিছানায়।

উল্কাপতনের শব্দে ভোর ছুটে এলে, দেখি, চিহ্নে চিহ্নে মা-মেরীর ছবি, দুধমুখে বালখিল্যের পৃথিবী শুয়ে আছে নদীর আদরে।

❑ দুরবিনের বিস্ময়

চালনি কয় খালোইয়েরে— পাছা তোর ছ্যাঁদা। এ নিয়ে পাড়াতে তুমুল বিবাদ। সালিশে আসেন জাল মহাশয়। তার ছ্যাঁদা আরো ইয়াইয়া এবং সব থেকে বেশি। এখন কে করে কার বিচার!

পাতিল উনুনে চড়ে রান্না পাকাতে পাকাতে বলে— তোমাদের বিবাদ না থাকলে আমিও ঘুচিয়ে দিতাম আগুনের কেরামতি। ওদিকে দিয়াশলাই আঙুলকে, আঙুল হাতকে, হাত শরীরকে, শরীর মনকে দোষারোপ করতেই পেটের চিন্তায় ভেস্তে গেল সুধী সমাবেশ!

একটাও তালগাছ কাটা পড়লো না। কারণ— প্রেরিত পুরুষের মতো বিচারে সেপাই ছিল— ঊর্ধাঙ্গ ও নিম্নাঙ্গের!

❑ ক্ষতকালের গোঙানি

আলোকমিতা, তুমি তো জানো না—
জীবনকে ধুলো করে
হাতের মুঠোয়
ফুঁ দিয়ে উড়ালো যারা,
তারাই বুঝেছে কেবল দগ্ধ ও দহনের পার্থক্য।

দ্যাখো, ওই দ্যাখো—
সময়কে ফাঁসি দিয়ে হেঁটে যাচ্ছে তিনটা সোনালি কবুতর,
তারাও রোদ্দুর হতে চেয়েছিল।

সাবধান, মানুষের ছায়া দিয়ে মানুষকে মাপতে যেও না,
ঠকবে তাহলে।


সাবস্ক্রাইব করুন! মেইল দ্বারা নিউজ আপডেট পান